একজন বাদল সৈয়দ

বাদল সৈয়দ

সৈয়দ মোহাম্মদ আবু দাউদ পেশায় উর্দ্ধতন সরকারী কর্মকর্তা (কর কমিশনার), পাশাপাশি একজন সমাজ কর্মী ও লেখক। তাঁর কথায় ‘আমি দিনের বেলায় প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী এবং রাতের বেলায় একজন পাঠক ও লেখক।’ সমাজ কর্মী ও লেখক হিসাবে তিনি তাঁর Pen Name ‘বাদল সৈয়দ’ লিখতেই বেশী পছন্দ করেন। তিনি বাংলাদেশে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যক্তিত্ব হিসেবে খুবই জনপ্রিয়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার অসংখ্য ফলোয়ার রয়েছে। সরকারী চাকরির বাইরে তিনি বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় দাতব্য সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেছেন, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে-

  • Pay it Forward : এই প্রতিষ্ঠানটি সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করে।
  • Honest : একটি অলাভজনক অনলাইন / অফলাইন শপ, যেটি লাভের একটি অংশ ক্রেতাদের মাঝে বন্টন করে।
  • Parents’ Lounge : প্রবিণ নাগরিকদের জন্য বিনামূল্যে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত সময় কাটানোর স্থান (বৃদ্ধাশ্রম নয়)।
  • March Forward (BCS coaching for free) : সরকারী চাকরির পাশাপাশি বেসরকারী চাকরি প্রত্যাশিদের জন্য একটি মুক্ত প্ল্যাটফর্ম।
  • Read, Read, Read (পলান সরকার সারা দেশে) : সর্ব সাধারণের জন্য উন্মুক্ত পাঠাগার।
  • স্বল্পমূল্যের রেস্টুরেন্ট : নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষের জন্য স্বল্পমূল্যে উন্নত খাবার পরিবেশনের রেস্তোঁরা। এখানে মাত্র ১০০ টাকার চেয়েও কম মূল্যে খাবার পরিবেশন করা হয়, যেখানে খাবারের গড় ব্যয় প্রায় ৭০০ টাকা।

তাঁর দাতব্য প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি বিশেষত্ব হলো, প্রতিষ্ঠানগুলো কখনোই কোন তহবিল সংগ্রহ/জমা করে না, কেবল দাতাদের সাথে সুবিধাবঞ্চিতদের সংযুক্ত করে দেয়। Honest এবং স্বল্পমূল্যের রেস্টুরেন্ট এই দুইটি প্রতিষ্ঠান ব্যতীত বাকি সকল প্রতিষ্ঠানের সকল সেবা সম্পূর্ন বিনামূল্যেই পাওয়া যায়। Honest এবং স্বল্পমূল্যের রেস্টুরেন্ট এই দুটি প্রতিষ্ঠানের জন্যও কাস্টমারদের যে চার্জ প্রদান করতে হয়, তা গড় বাজার মূল্যের মাত্র এক পঞ্চমাংশ। দেশের বাইরেও এই প্রতিষ্ঠানগুলোর যথেষ্ট সুনাম রয়েছে।

এই প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্ম শুধুমাত্র তাঁর বাদল সৈয়দ এর আবেগ থেকেই, তবে পেশায় তিনি একজন সরকারী কর্মচারী। বর্তমানে তিনি আয়কর বিভাগে কর কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে তিনি সহকারী কর কমিশনার, উপ কর কমিশনার, যুগ্ম কর কমিশনার এবং অতিরিক্ত কর কমিশনার হিসেবে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (ট্যাক্সেশন) ক্যাডারে কাজ করেছেন। তিনি অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে প্রথম সচিব হিসাবে দুই বছর দায়িত্ব পালন করেছেন। সরকারি চাকরির সুবাদে তিনি DFID দ্বারা স্পনসরকৃত Taxation System Modernization in Bangladesh প্রকল্পে ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা হিসাবে সহায়তা করেছিলেন। এ’ছাড়াও তিনি দেশে বিদেশে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ লাভ করেছেন।

তিনি চট্টগ্রাম ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বিজিসি ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটি এবং ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির মতো কয়েকটি স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে খণ্ডকালীন অনুষদ হিসাবে কাজ করেছেন। বাদল সৈয়দ তার জাতিসংঘ ও অর্থ মন্ত্রনালয়ের প্রকাশনার কৃতিত্বের জন্য বিভিন্ন সময়ে দেশ বিদেশের মিডিয়ায় কভারেজ পেয়েছেন।

তিনি জাতি সংঘের সাথে International Taxation বিষয়ে কাজ করেছেন। তিনি জাতিসংঘের Tax Treaty Negotiation and Administration / Negotiation of Tax Treaties for Developing countries / Protecting Tax Base of Developing Countries taxation হ্যান্ডবুকগুলো প্রকাশে বিশেষ অবদান রেখেছেন।

তিনি বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় লেখক, তরুণদের কাছে বিশেষভাবে প্রিয়। তিনি এ পর্যন্ত দশটি বই প্রকাশ করেছেন, বইগুলো হচ্ছে-

  • সাক্ষী ছিল পক্ষী সকল
  • আমার মুক্তি ওই আকাশে
  • রোজাবেল মা তোকে বলছি (মোর‌্যাল প্যারেন্টিং)
  • স্বপ্নডানা
  • ছায়া সন্ধান
  • সাধুসঙ্গ
  • অলৌকিক আঙ্গুল
  • জলের উৎস
  • মাটির পিঞ্জিরার মাঝে
  • জন্মজয়

তিনি একজন সরকারী কর্মকর্তার চেয়ে, একজন লেখক এবং সামাজিক কর্মী হিসাবে পরিচিত হতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। বাদল সৈয়দ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাবলিক এডমিনিষ্ট্রেশন এর উপর বি.এস.এস. এবং এম.এস.এস. সম্পন্ন করেছেন। বর্তমানে তিনি স্বপরিবারে চট্টগ্রামে বসবাস করছেন। তিনি সবসময় চেষ্টা করেন সমাজ তাকে যা দিয়েছে, সমাজকে তা ফিরিয়ে দিতে। সে কারণেই তিনি একটি লক্ষ্যকে কেন্দ্র করে জীবনযাপন করেন, যা তাকে তাঁর জীবনের প্রতিটি দিনকে প্রভাবিত করে এবং অন্যকেও তা অনুসরণ করতে উত্সাহ দেন: ‘আসুন মায়া ছড়াই’


বইগুলো অনলাইনে সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন-

     



তথ্য সূত্র: www.badalsyed.net

পোস্টটি শেয়ার করুন