পদ্মা নদীর মাঝি – মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
কুবের উঠিয়া দাঁড়ায়, বলে, শো কপিলা।
তুমি কই যাও?
উই পাটিতে শুই গিযা আমি, যামু কই?
ক্ষীণ ভীরু কণ্ঠে কপিলা বলে, না, যাইও না মাঝি।
কুবের কি রাগিয়া যায়? কড়া সুরে জিজ্ঞাসা করে, কী করুম তবে?
ডরামু মাঝি।
কী আর করিবে কুবের, আবার সে পাটিতে বসে। কপিলা তাহার চাদরখানা পুঁটুলি করিয়া তাহাকে বালিশ করিয়া দেয়। তার নিজের মাথায় দেওয়ার জন্য ছোটো একটি পিঁড়ি আছে। কুবের শুইয়া পড়িলে এতক্ষণে কপিলা চুল খুলিয়া দেয়, আঙুল দিয়া চুল আঁচড়াইতে আঁচড়াইতে বলে, গোপির লাইগা পেরানডা পোড়ায় মাঝি, স্যায় বুঝি ডরাইয়া কাইন্দা মরে।
বুঝিতে পারা যায় কপিলা কাঁদিতেছে।
কেডা জানে কবে মাইয়া সাইরা উঠা বাড়িত্ যাইব। মাইয়ারে ফেইলা ক্যামনে ফিরুম মাঝি কাইল?
কুবের কাঠ হইয়া পড়িয়া থাকে। এখানে কাঁদিতেছে কপিলা, ওখানে মালাও হয়তো কাঁদিতেছে এখন। পথের দিকে চাহিয়া কত কী হয়তো ভাবিতেছে মালা। আর গোপি কী করিতেছে তা যেন ভাবাও যায় না।
পরদিন ভোরে আগে ঘুম ভাঙিল কপিলার। হাই তুলিয়া সে উঠিয়া বসিল, ঠেলা দিয়া কুবেরকে তুলিয়া দিল। বেড়ার বাহিরে পাটিতে এখনও রাত্রির অতিথিরা নাক ডাকাইতেছে, শুধু বাহিরের দুয়ারের কাছে কেরোসিন কাঠের বাক্সে বসিয়া তামাক টানিতেছে হোটেলের মালিক। রান্নাঘরে দাসী উনানের ছাই তুলিতেছে। কপিলাকে দেখিয়া ঘুমন্ত কুকুরটা উঠিয়া দাঁড়াইয়া লেজ নাড়িতে লাগিল।
মৃদু মধুর শীত পড়িয়াছে। কুবেরের চাদরখানা পরিযা কপিলা প্রথমে নদীতে ডুব দিয়া আসিল, তারপর স্নান করিতে গেল কুবের। কুবের ফিরিয়া আসা পর্যন্ত কপিলা ঘেরা স্থানটুকুর মধ্যে লুকাইয়া রহিল। পুরুষের দৃষ্টিপাতে আজ বড়ো লজ্জা করতেছে কপিলার, দিনের আলোয় আজ তার মনে হইতেছে জগৎসুদ্ধ সকলেই বুঝি জানে যার পাশে শুইয়া সে রাত কাটাইয়াছে সে তাহার স্বামী নয়। মুড়ি আর বাতাসা কিনিয়া কুবের ফিবিয়া আসিল। দুমুঠা খাইয়া কপিলা বলিল, আর সে খাইবে না। না থাক, কুবেরের পেটে জায়গা আছে ঢের। ধীরে ধীরে মুড়ি আর বাতাসা শেষ করিয়া সে বলিল, ল যাই হাসপাতাল।
তখন সবে রোদ উঠিয়াছে। এত সকালে গোপির সঙ্গে তাহারা দেখা করিতে পারিল না। নটা পর্যন্ত হাসপাতালের সামনে বসিয়া থাকিতে হইল। তারপর ঘণ্টাখানেক গোপির কাছে থাকিয়া, তাহাকে অনেক আশ্বাস ও সান্ত্বনা দিয়া ঘাটে ফিরিয়া আসিল। জহরেব শালা নুরুলের নৌকা কাঠের বোঝা নামাইয়া দেবীগঞ্জ ফিরিয়া যাইতেছিল, সেই নৌকায় তাহারা উঠিয়া বসিল।
গ্রামের ঘাটে নামিয়া কুবের বলিল, বাড়িত্ যা কপিলা, আমি গণেশের লগে দেখা কইরা যাই। বাড়িতে যদি ঝড়ঝাপটা ক্ৰন্দন ঘনাইযা থাকে প্রথম ধাক্কাটা কপিলার উপর দিয়াই যাক। কপিলা কিন্তু এক বাড়ি যাইতে রাজি হইল না, রুখিযা বলিল, আরে পুরুষ!
তখন আর কথাটি না বলিয়া কুবের হনহন করিয়া বাড়ির দিকে চলিতে আরম্ভ করিল। কপিলা পিছাইযা পড়িল। পথে যার সঙ্গে দেখা হইল সেই সগ্রহে গোপির সংবাদ জিজ্ঞাসা করিল, চাপা হাসি ঢাকা পরিহাস রূঢ় ইঙ্গিত কিছুই কারও কাছে জুটিল না কুবেবেব। এত কী সুনাম সে বাথিয়া গিযছিল গ্রামে যে কপিলার সঙ্গে একটা পুবা রাত্রি অজানা স্থানে অতিবাহিত করিয়া আসিয়াও সে সুনাম নিটোল অক্ষত দেখিতে পাইতেছে? ব্যাপারখানা কী? চলিতে চলিতে হঠাৎ কুবেরের মনে পড়ে, দুজন তো নয়, গোপিকে ধরিলে তারা যে তিনজন। গ্রামে লোক তাকে আর কপিলাকে হোটেলের চাঁচের বেড়ার নির্জনতায় পৃথকভাবে কল্পনা করে নাই, ওদের সঙ্গে গোপিকেও একত্র চিন্তা করিয়াছে। কারও মনে তাই সন্দেহ জাগিবার অবকাশ থাকে নাই।
কুবের দাঁড়াইল। কপিলা কাছে আসিলে বলিল, দ্যাখ কপিলা, জিগাইলে কইস রাইতে হাসপাতালে ছিলাম, গোপির কাছে।
কপিলা মাথা নাড়িয়া বলিল, দুর অ! মিছা কথা আমি কই না মাঝি!
বলিয়া খানিক আগে কুবের যেমন করি্য়াছিল তেমনি হনহন করিয়া কপিলা আগাইয়া গেল। কে জানে কী আছে কপিলার মনে! বারণ না মানিয়া কাল ও আমিনবাড়িতে থাকিয়া গেল, আজ বারণ না মানিয়া সত্য কথা বলিতে চায়! বলুক! পুরুষ মানুষ কুবের কী ভয তার? কপিলার সত্যবাদিতার ফল যদি কেহ ভোগে, ভুগিবে কপিলাই!
বাড়ি গিয়া কুবের দেখিল, মালার কাছে কপিলা সবিস্তারে আমিনবাড়ির কাহিনি বলিতেছে। কাছে চাটাইটার উপর সে বসিয়া পড়িল। মালাকে সবই বলিবে নাকি কপিলা, হোটেলে রাত্রিযাপনের কথা পর্যন্ত? কপিলা বলিয়া যায়—সন্ধ্যাবেলায় কী বিপদেই তারা পড়িল। হাসপাতালে থাকিতে দিল না, ফিরিবার নৌকা পাওয়া গেল না, কোথায় যায়? শেষে এক মোক্তারবাবু দয়া করিয়া তাদের আশ্রয় দিলেন।—কী নাম যান মাঝি মুক্তারবাবুর? মুখ ফিরাইয়া কপিলা জিজ্ঞাসা করিল কুবেরকে।
কুবের থতোমতো খাইয়া বলিল, কেডা জানে?
জিগাও নাই?
কুবের মাথা নাড়িল।
দুদিনের মধ্যে আর গোপিকে দেখিতে যাওয়া হইল না। জীবিকা অর্জন করিতেই কুবের ব্যস্ত হইয়া রহিল। পরের দিন সকালে মালা ভয়ানক গোলমাল আরম্ভ করিয়া দিল। আই গো কুবেরের পাষাণপ্ৰাণ! মেয়েটাকে সে যে কোথায় রাখিয়া আসিল আর কী তাহার খবর লইতে হইবে না! জন্মের মতো রাখিযা দিয়া আসিয়াছে নাকি মেয়েকে, এমন যে নিশ্চিন্ত হইয়া আছে কুবের?
সারারাত মাছ ধরিয়া কুবের তখন বাড়ি ফিরিয়াছে। ভাত খাইয়া দুপুরবেলা আমিনবাড়ি রওনা হওয়া্র প্রতিশ্রুতি দিয়া সে মালাকে শান্ত করিল। তারপর ঘুমাইতে গেল পিসির ঘরে। ঘুমাইয়া উঠিয়া স্নান করিয়া আসা অবধি সে আড়চোখে চাহিতে লাগিল কপিলার দিকে। কে জানে কপিলা আজ সঙ্গে যাইতে চাহিবে কিনা! কপিলা কিছু বলে না, একরার সামনে আসে একরার অন্তৰ্হিত হয়।
খাইতে বসিয়া কুবের বলে, খাইয়া উঠ্যাই আমিনবাড়ি রওনা দিমু কপিলা।
ফিরবা না আইজ?
কেডা জানে! হয়তো হোটেলে থাকুম।
হোটেলে ক্যান? থাইকো, মুক্তার বাবুগো বাড়ি থাইকো!
বলিয়া কপিলা হাসে। লজ্জা পাইয়া ঘাড় হেঁট করিয়া কুবের খাইয়া যায়। না, কপিলার মনের হদিস পাইবার ভরসা তাহার আর নাই। কখন কী বলিবে কখন কী করিবে কিছুই অনুমান করিতে পারা যায় না।
খাইয়া উঠিয়া কুবের ময়লা চাদরটি গাযে জড়াইযা যাওযাব জন্য প্রস্তুত হইল। বড়ো সে গম্ভীর হইয়া গিয়াছে, যেন এমন একটা অপমান সম্প্রতি তাহার জুটিযাছে যাহা তাহার প্রাপ্য নয়। বড়ো নির্মম কপিলা, বড়ো দুর্বোধ্য তাহার ব্যবহার।
রওনা হওয়ার সময় কুবেরকে চার আনা পয়সা দিয়া কপিলা বলিল, গোপিরে ফল কিনা দিবা মাঝি। তারপর মালাকে বলিল, মাঝির লগে যামু নাকি দিদি?
মালা বলিল, তব গিয়া কাম কী?
তখন কপিলা বিষণ্ণভাবে একটু হাসিল, কুবেরের দিকে চাহিয়া জিজ্ঞাসা করিল, মাঝি কী কও?
কুবের মাথা নাড়িল, তাড়াতাড়ি বাহির হইয়া গেল। আমিনবাড়ি সে পৌঁছিল অপবাহ্নে, কপিলার পয়সা দিয়া স্টিমারঘাট হইতে কমলা লেবু কিনিয়া গোপিকে দেখিতে গেল, নদীতীরে ফিরিয়া আসিল সন্ধ্যাবেলা। আজ বাড়ি ফিরিবার নৌকার অভাব নাই, তবু কুবেরের কেন যেন ফিরিতে ইচ্ছা হইতেছিল না, অনেক রাত্রি অবধি নদীতীরে বসিয়া থাকিয়া সে হোটেলে ভাত খাইতে গেল। খাইতে খাইতে সে শুনিতে পাইল বাজারে আজ ভাসান-যাত্রা হইতেছে। আজ কুবের কাছে না থাকিলে কেহ ভয় পাইবে না, খাইয়া উঠিয়া সে বাজারের দিকে পা বাড়াইল।
বাজারে টিনের চালার নীচে যেখানে তরিতরকারির দোকান বসে সেইখানে যাত্রার আসর বসিয়াছে, লোক জমিয়াছে ঢের। কুবের একপাশে বসিয়া পড়িল। পানবিড়ির দোকান ছাড়া এতরাত্রে পসরা সাজাইয়া কেহ নাই, রূপ-কন্যারাও যাত্রা শুনিতে আসিয়াছে। পেশাদার দল নয়, আলু-বেচা তেল-বেচা মানুষের শখের দল, অনেকে হয়তো পড়িতেও জানে না, একে ওকে দিয়া পড়াইয়া শুনিয়া শুনিয়া পার্ট মুখস্থ করিয়াছে, শক্ত শক্ত অনেক শব্দই উচ্চারণ হয় না, তাই হাস্যকর রকমে ভাঙিয়া জিহ্বার উপযোগী করিয়া নিয়াছে—বক্তৃতাগুলি কথ্য ও শুদ্ধ ভাষার এক অপরূপ খিচুড়ি। পোশাক পরিচ্ছদের যেমন অভাব, অভিনেতা নির্বাচনের কাণ্ডজ্ঞানেরও তেমনই অভাব। বালক লখিন্দরের পাশে তার চেয়ে একহাত বেশি লম্বা বেহুলা নির্বিকীরচিত্তে পার্ট বলে–গলাটি মিহি বলিয়া আর চমৎকার মেয়েলি ঢঙে অভিনয় করিতে পারে বলিয়া ওকে বেহুলা করা হইয়াছে আর কিছু দেখিবার প্রয়োজন হয় নাই।
তবু রাত জাগিয়া ভিড় করিয়া সকলে ভাসান-যাত্রা শোনে, একরার নয় বহুবার। ভাঙা হারমোনিয়াম আর ঢ্যাপ্সা তবলাব সঙ্গত, মশালেব লাল আলো, আলু বেচা তেল-বেচা অভিনেতা—তবু কী মোহ এ যাত্রার! কুবের ঠায় বসিয়া থাকে ৷ ঢিমাইয়া ঢিমাইয়া অভিনয় চলে, মা মনসা একটা গান কবেন, চাঁদ সদাগর দুটো কথা বলে, মৃত লখিন্দর উঠিয়া একটা গান করিয়া আবার মরিয়া যায়। কোথায় কখন কোন দৃশ্যের শুধু, সর্পদষ্ট লখিন্দরের জন্য বেহুলার বহুল বিলাপের পর মা মনসা আবার কেন চাঁদ সদাগরকে ভয় দেখাইয়া যান যে তাকে পূজা না করিলে লখিন্দরকে সাপে কাটিবে, এ সব বুঝিবার দবকার হয় না, কুবের মন দিয়া যাত্রা শোনে। রাত্রি শেষ করিয়া যাত্রা শেষ হইলে পেঁয়াজের যে খালি বস্তাটার উপর সে এতক্ষণ বসিয়া ছিল তার উপরেই কাত হইয়া ঘুমাইয়া পড়ে। কিন্তু বেশিক্ষণ ঘুমানো্র সুযোগ সে পায় না। সকাল হইতে না হইতে তাহাকে ঠেলিয়া তুলিয়া দেওয়া হয়। সেখানে এবার দোকান বসিবে।
অনেক বেলায় সে গ্রামে ফেরে। দেখিতে পায় বাড়িতে অতিথি আসিয়াছে। কপিলার স্বামী শ্যামাদাস!
লম্বা চওড়া প্রকাণ্ড জোয়ান মানুষ, ঘাড়-ঘেঁষা বাবরি চুল মাথায়, বোঁচা নাকটার নীচে একজোড়া উদ্ধত গোঁফ–-খুটিতে ঠেস দিয়া বসিবাব ভঙ্গি দেখিলে মনে হয় বিশ্বজগতে কারও সে তোয়াক্কা রাখে না। কুবেরের মুখখানা ম্লান হইয়া যায়! কে জানে কেন আসিয়াছে শ্যামাদাস!
শ্যামাদাসের আসিবার উদ্দেশ্য জানিতে বেশি দেরি হইল মা! এ পক্ষের বউটি তাহার মরিয়া গিয়াছে। কপিলাকে সে নিয়া যাইবে। কখন যাইবে? বেলা পড়িয়া আসিলে এক সময় রওনা হওয়া যাইবে, সে জন্য কী! কুবের যদি খাতির করিয়া একটা দিন থাকিয়া যাইতে বলে তাতেও শ্যামাদাসের আপত্তি নাই।
বসিয়া বসিয়া তাহারা কথাবার্তা বলে, কপিলা এক সময, আসিয়া ফিসফিস করিয়া স্বামীর কানে কানে কী যেন সব গোপনে কথা বলে, তারপব হাসিয়া চলিয়া যায়, পিসির ঘরে ঢুকিবার আগে মুখ ফিরাইয়া চোখের একটা দুর্বোধ্য ইঙ্গিতও করে।
এত বেলায় কুবের ফিরিয়া আসিয়াছে, কই খাওযার কথা কপিলা তো কিছু বলিল না? কুবেরের ক্ষুধাতৃষ্ণার কথা মনে রাখিবার প্রযোজন কি কপিলার ফুরাইয়া গিয়াছে? গোপির কথাও তো কিছু সে জিজ্ঞাসা করিল না?
গায়ের চামড়াটা কুবেরের আজ বড়ো খসখস করিতেছিল, অনেকদিন তেল মাখা হয নাই। শ্যামাদাস আসিয়াছে বলিয়াই কপিলা বোধ হয় আজ চুলে আবার জবজবে করিয়া নাবিকেল তেল দিয়াছে। কালো একটি বোতলে বিলাসিতার এই উপকরণটি কপিলা সর্বদা মজুত রাখে, একটা কিছু উপলক্ষ পাইলেই বোতলটা কাত করে মাথায়। শ্যামাদাসকে বসিতে বলিয়া কুবের কপিলার কাছে একটু তেল চাহিল। কপিলা করিল কী, রাধিবার তেল-রাখা বাঁশের পাত্রটি আনিয়া বলিল, ধর মাঝি, হাত পাত। কুবের হাত পাতিলে পাত্রটা সে একেবারে উপুড় করিয়া ধরিল, এক ফোটা তেলও কুবেরের হাতে পড়িল না।
কপিলা বলিল আই গো আই, ত্যাল ত নাই!
বলিয়া কী হাসি কপিলার!
কুবের কথাটি বলিল না, বাঁশের পাত্রটি তার হাত হইতে ছিনাইয়া লইয়া এই দুপুরবেলা অভুক্ত অবস্থায় গ্রামের ভিতরে গিয়া দু পয়সার তেল কিনিয়া আনিল। কপিলাকে দেখাইয়া দাওয়ায় বসিয়া সর্বাঙ্গে ঘষিয়া ঘষিয়া বহুক্ষণ ধরিয়া সে তেল মাখিল, নিজের দেহটিকে সে যেন কপিলার চুলের মতোই তেলে জবজবে করিয়া ছাড়িবে।
সারাদিন কপিলার সঙ্গে সে কথা বলিল না।
কিন্তু সন্ধ্যার পর মাছ ধরিতে যাওয়ার সময় তামাকের গোলাটা সঙ্গে লইতে ভুলিয়া গেল। নৌকায় গিয়া একা সে বসিয়া রহিল প্রতীক্ষায়, এক সময় গণেশ ও ধনঞ্জয় আসিয়া তাহার সঙ্গে যোগ দিল, তারপর মৃদু জ্যোৎস্নায় পদ্মার বহস্যময় বুকে নৌকা ভাসিয়া গেল, কিন্তু তামাক পৌঁছাইয়া দিতে কেহ আসিল না।
পরদিন কপিলাকে সঙ্গে করিয়া শ্যামাদাস চলিয়া গেল।